- Homepage
- কাতারের খবর
- কাতারের ট্রাফিক রুল সম্পর্কে সচেতন হোন
কাতারের ট্রাফিক রুল সম্পর্কে সচেতন হোন
সম্প্রতি কাতারের ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট এর পক্ষ থেকে কাতারে বসবাসরত বাংলাদেশীদের ট্রাফিক আইন সম্পর্কে সচেতন করার জন্য অনলাইনে এক সমাবেশের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে কাতারের ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট এর এ্যাওয়ারনেস এন্ড ট্রাফিক কালচার অফিসার লে. মিশাল আলী আল গুদাইদ, কাতারস্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রতিনিধি জনাব ড. মুস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ কমিউনিটি কাতার (কিউবিসি) এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হুসাইন আকন সহ বাংলাদেশ কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ অংশ গ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে লে. মিশাল আলী আল গুদাইদ উল্লেখ করেনঃ
o মাস্ক ব্যবহার করুন–কারণ এমাসে করোনার প্রভাব বেড়ে গেছে। এজন্য বাহিরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার করুন।
o একই গাড়ীতে ৪জনের বেশী আরোহন করবেন না। তবে একই ফ্যামেলীর সদস্যগন হলে ৪জনের বেশী আরোহন করতে পারবেন। একই ফ্যামেলীর সদস্য না হলে গাড়ীতেও সকলকে অবশ্যই মাক্স পরিধান করতে হবে।
o সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে একজন থেকে আরেকজনের জন্য কমপক্ষে ২মিটার।
o সকল ক্ষেত্রে ঘর থেকে বের হওয়ার সময় ইহতেরাজ এ্যাপ ব্যবহার করতে হবে। ঘর থেকে বাহির হওয়ার সময় ইহতেরাজ এ্যাপ একটিভ আছে কিনা, তা চেক করে নিতে হবে।
o কোন ধরণের সভা সমাবেশ করা যাবে না। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য নিজেদের নিরাপত্তার জন্য সকল ধরণের গ্যাদারিং বন্ধ রাখতে হবে।
o করোনা টেস্ট করার পর রেজাল্ট না আসা অবধি ঘরে অবস্থান করতে হবে। করোনা টেস্ট করালে রেজাল্ট আসার আগে ভেকসিন দেবেন না। রেজাল্ট আসার পর ভেকসিন দিন।
o ইহতিরাজ এ্যাপ এর কেবলমাত্র সবুজ বারকোড ছাড়া বাহিরে যাওয়া যাবে না। বাকী ৩টি রং–এর সকল ক্ষেত্রে পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করতে পারে। এমনকি আপনি যদি ভেকসিন দিতে কিউএনসিসিতে যান, তাহলে আপনাকে ভেকসিন দেয়া হবে না।
o এ পর্যন্ত ৫৮০জন ব্যক্তিকে মাস্ক না পরার কারণে, ২৩জনকে গাড়ীর নিয়ম না মেনে বেশী যাত্রী উঠানোর কারণে, ১৪জনকে সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখার কারণ, ৮জনকে কোয়ারেন্টাইন নীতি লংঘন করার কারণে এবং ৬জনকে ইহতেরাজ না থাকার কারণে গ্রেফতার কারা হয়েছে।
o এর মধ্যে কিছু সংখ্যক ব্যক্তিকে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে এবং কিছু সংখ্যককে জরিমানা করা হয়েছে এবং কারাগারে নিক্ষেপ করা হয়েছে। বিধায় নিয়ম মেনে চলুন, নচেত আপনি বিপদে পড়তে পারেন।
কাতারস্ত বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তা ড. মুস্তাফিজুর রহমান উল্লেখ করেনঃ
o সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী কমপক্ষে ৪লক্ষ বাংলাদেশী কাতারে বসবাস করছে।
o কাতারের ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট যদি ট্রাফিক রুলের সামারী দূতাবাসে প্রেরণ করে তাহলে দূতাবাস তা ঢাকায় পাঠিয়ে দেবো। যাতে কাতারে নতুন আসা লোকদের জন্য আয়োজিত ট্রেনিং ক্যাম্প সমূহে তাদেরকে পূর্বেই প্রশিক্ষণ দেয়া যায়। তারা কাতারে আসার আগেই কাতারের ট্রাফিক রুল সম্পর্কে জানতে পারে।
o কাতারের লেবার ক্যাম্প সমূহে এ্যাওয়ারনেস ক্যাম্পিং–এর আয়োজন করতে হবে, যাতে সাধারণ প্রবাসী বাংলাদেশীরা ট্রাফিক রুল সম্পর্কে অবগত হতে পারে।
o কাতারস্ত বাংলাদেশ দূতাবাস কাতারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সহযোগিতায় দূতাবাসে ক্যাম্পিং এর আয়োজন করতে পারে।
o কাতারের হ্যাল্প লাইন ৯৯৯ বিভিন্ন ভাষায় কথা বলার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু বাংলা ভাষায় কথা বলার সুযোগ নাই। যেহেতু এখানে ৪লক্ষ বাংলাভাষীর বসবাস, সেহেতু হ্যাল্প লাইনে বাংলা ভাষা অন্তর্ভূক্ত করা খুবই জরুরী।
বাংলাদেশ কমিউনিটি কাতার এর সভাপতি জনাব ইঞ্জিনিয়ার আনোয়ার হোসাঈন উল্লেখ করেনঃ
o কাতারে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী উন্নতি হয়েছে। যা আমাদের সময়কে যেমন বাঁচাচ্ছে একই ভাবে ট্রাফিক এক্সিডেন্ট হ্রাস হয়েছে।
অনুষ্ঠানে ট্রাফিক ডিপার্টমেন্ট এর পক্ষ থেকে স্লাইডশো এর মাধ্যমে ট্রাফিক রুল সম্পর্কে উল্লেখ যোগ্য বিষয় উপস্থাপন করা হয়। যা কতিপয় এখানে পেশ করা হলোঃ
o ট্রাফিক এ্যাওয়ারনেস ডিপার্টম্যান্ট হোয়াইটসআপ নম্বর হচ্ছেঃ 66953184, যে কোন প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যেতে পারে।
o ট্রাফিক এক্সিডেন্টে গত বছরে কাতারে মৃত্যুর সংখ্যা ১লাখে ৪জন। যা বিশ্ব রেংকে ১৮.২ যার অগ্রগতির পরিমাণ ৮.৩
o ২০২০ সালে ৯৬টি সাধারণ এক্সিডেন্ট হয়েছে, যাতে কেউ আহত হয় নাই।
o ২০২০ সালে কাতারে রোড এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ১৫৫৮১২টি। তন্মধ্যে অসতর্কতার কারণে এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ২৪৪২টি, প্রয়োজনীয় দূরত্ব বজায় না রাখার কারণে এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ১২৫৯টি, রোড ক্রসিং এ এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ৫৭৪টি এবং রোড ছেড়ে রোডের বাহিরে চলে যাওয়ার কারণে এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ৭০৭, অন্যান্য কারণে এক্সিডেন্ট হয়েছেঃ ৭৭৮টি।
o ট্রাফিক সিগনাল লংঘন করলে ৬ হাজার রিয়াল আর্থিক জরিমানার সাথে ৭ ব্লাক পয়েন্ট যুক্ত হয়।
o রেড সিগনাল ক্রস করা মানে ২টি অপরাধ। একঃ ৮০ কিলোমিটারের অতিরিক্ত চালানো। কারণ রোডের স্পীড লিমিট যাই হোক না কেন, সিগনাল ক্রসের সময় স্পিড লিমিট হচ্ছেঃ ৮০ কিলোমিটার। দুইঃ রোড সিগনাল ক্রস করা।
o সিটবেল্ট, যা এক্সিডেন্ট হলে আপনাকে বাঁচায়। সিটবেল্ড পরিধান করার কারণে ৫০ ভাগ মানুষ আহত হয়না এবং প্রায় ৭০ ভাগ লোক মৃত্যু থেকে বেঁচে থাকে। ৭৪ শতাংশ মৃত্যুর ঘটনায় দেখা যায়, তারা সিটবেল্ট পরিধান করেনি। সিটবেল্ট পরিধান না করার কারণে এক্সিডেন্ট এর সময় আরোহী গাড়ীর বাহিরে সিটকে পড়ার ঘটনা ঘটে।
o সিট বেল্ট না বাঁধার কারণে জরিমানার পরিমাণ হচ্ছেঃ ৫০০ রিয়াল।
o ১০ বছরের কম বয়সী শিশু-কিশোর সামনের সিটে বসলেঃ ৫০০ রিয়াল জরিমানা।
o সিগনালের কাছে ডান পাশে রাস্তা থেকে বামপাশের মূল রাস্তায় প্রবেশ করলে ১০০০ হাজার রিয়াল জরিমানা, সাথে গাড়ীর জন্য ১ সপ্তাহের জেল তথা একটি নির্দিষ্ট স্থানে সংশ্লিষ্ট গাড়ী ১ সপ্তাহ আটকে রাখা হবে এবং এক্ষেত্রে ১ সপ্তাহের জন্য নির্ধারিত পার্কিং ফিও প্রদান করতে হবে।
o কাতারে অত্যাধুনিক ক্যামেরা সমূহ স্থাপন করা হয়েছে মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য। সড়কের নিরাপত্তার জন্য এবং প্রায় ৭০ ভাগ রাস্তা এই ক্যামেরা সমূহের অধীনে রয়েছে।
o এক্সিডেন্টে যদি কেউ আহত না হয়, তাহলে সাথে সাথে পার্শবর্তী সার্ভিস রোডে গাড়ী সরিয়ে নিতে হবে। নতুবা ১ হাজার রিয়াল জরিমানা রয়েছে, সাথে ৩ ব্লাক পয়েন্ট যুক্ত হবে। অপ্রয়োজনে রাস্তা বন্ধ করা যাবে না।
o এক্সিডেন্ট হলে পুলিশে ফোন করুন। গাড়ীর নম্বর নোট করুন। এক্সিডেন্টের ছবি গ্রহণ করুন। গাড়ী পার্শবর্তী পার্কিং এ নিন। দুই পক্ষ একমত হলে মাতরাশ ২ তে নিবন্ধন করুন এবং ছবি প্রেরণ করুন। দুই পক্ষ একমত না হলে পুলিশের অপেক্ষা করুন।
o এক্সিডেন্ট সাইট থেকে পলায়ন করা গুরুতর অপরাধ। এক্ষেত্রে ১ থেকে ৩মাসের জেল এবং সাথে ১০ হাজার থেকে ৫০ হাজার জরিমানা রয়েছে।
o সিগনালে সামনে প্রয়োজনীয় খালি স্থান না থাকা অবস্থায় ঢুকে পড়া এবং পরে লাল সিগনাল চলে আসার কারণে যদি ট্রাফিক ব্লক হয় তাহলে ৩ পয়েন্ট ও ৫০০ রিয়াল জরিমানা রয়েছে। বিধায় সিগনাল ক্রস করার সময় লক্ষ্য রাখতে হবে যে, সামনে গাড়ী আছে কিনা এবং সিগনাল বন্ধ হওয়ার আগেই নির্দিষ্ট এলাকা ক্রস করা যাবে কি না।
o টেলিফোন ব্যবহার করা ড্রাইভিং এর সময় অপরাধ। এতে করে মনযোগ বিঘ্নিত হয়। অথচ আমরা ফোন রিসিভ করি, টেক্স ম্যাসেজ পাঠাই বা ফেইসবুক ইউজ করি। এতে এক্সিডেন্টে প্রচুর ঝুকি রয়েছে এবং এতে রয়েছে ৫০০ রিয়াল জরিমানা।
ড্রাইভারদের দৃষ্টি আকর্ষণঃ জেনে নিন কখন আপনার লাইসেন্স বাতিল হতে পারে
সিগনালের কাছে ডানপাশ থেকে বাম পাশে যাওয়ার বিষয়টি বুঝলাম না