প্রশ্নোত্তর – তাফহীমুল কুরআন – সূরা আন নিসা

প্রশ্নোত্তর – তাফহীমুল কুরআন – সূরা আন নিসা

০১. ভয়ের নামায কত হিজরীতে কোথায় শুরু হয়?

উত্তরঃ যাতুর রিকা যুদ্ধে, ৪র্থ হিজরীতে।

০২. তাইয়ামুমের অনুমতি দেয়া হয় কোন যুদ্ধে এবং কত হিজরীতে?

উত্তরঃ বনীল মুসতালিক যুদ্ধে, ৫ম হিজরীতে।

০৩. এতিমদের সম্পদের ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান কি?

উত্তরঃ . শিশু ও নাবালেগ থাকা কালীন তাদের স্বার্থে সম্পদ ব্যয়।  ২. প্রাপ্ত বয়স্কা হবার পর সম্পদ তাদের নিকট ফিরিয়ে দেয়।

০৪. ولاتتبدلوا الخبيث بالطيب বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ . হালালের পরিবর্তে হারাম উপার্জন করনা।  ২. এতিমদের ভাল সম্পদের সাথে নিজের খারাপ সম্পদ পরিবর্তন করোনা।

০৫. সূরা নিসায় ২, , এবং ৪ বিবাহ করার কথা বলা হয়কে, কাদেরকে, কোন পরিস্থিতিতে বিয়ে করবে?

উত্তরঃ এতিমের অভিভাবক, সাধারণ মাহিলাদের মধ্য হতে পছন্দ মত, যদি বেইনসাফির ভয় করে।

০৬. গাইলান কে? তাকে নবী সা. কি নির্দেশ দিয়ে ছিলেন?

উত্তরঃ ইসলাম গ্রহণকারী তায়েফের প্রধান-যার ৯জন স্ত্রী ছিল। নবী সা. ৫জন  স্ত্রীকে তালাক দেবার জন্য তাকে নির্দেশ দেন।

০৭. চারের অধিক স্ত্রী ছিল এমন ২জন ইসলাম গ্রহণকারীর নাম কি কি? এবং     স্ত্রী সংখ্যা কত?

উত্তরঃ . তায়েফ প্রধান গাইলান-৯জন এবং  ২. নওফল ইবনে মুয়াবিয়া-৫জন

০৮. ذلك أدنى ألا تعدلوا – বেইনসাফী থেকে রক্ষা পাওয়ার এটি অধিকতর সহজ পদ্ধতি। সহজ পদ্ধতিটি কি?

উত্তরঃ পছন্দ সই মহিলা থেকে চারটা পর্যন্ত বিয়ে  অথবা অধীনস্থ দাসীদের বিয়ে।

০৯. যুদ্ধ বন্দি স্বামী স্ত্রীর ব্যাপারে শরীয়াতের বিধান কি?

উত্তরঃ হানাফী-বিয়ে ভাঙবেনা, মালেক ও শাফেয়ী-বিয়ে ভেঙে যাবে।

১০. মোহরানাকে কুরআনের ভাষায় কি বলা হয়েছে? মোহরানা ব্যাপারে হযরত উমর রা. এর বক্তব্য কি?

উত্তরঃ সাদাকা (صدقة) ।  আর মোহরানা সম্পর্কে উমর রা. এর অভিমত হল-যদি কোন স্ত্রী তার স্বামীর মোরানা মাফ করে দেয়ার পর আবার দাবী করে, তাহলে স্বামী তা পরিশোধে বাধ্য থাকবে।

১১. এতিমদের ধন-সম্পদ কখন তার হাতে সপোর্দ করা হবে?

উত্তরঃ দু’টি শর্ত পাওয়া গেলে।  ১. সাবালকত্ব।  ২. যোগ্যতা-সম্পদ সঠিক ব্যাবহারের।

১২. এতিমের অভিাবক এতিমের সম্পদ হেফাজতের জন্য কি কোন বিনিময় নিতে পারবে? পারলে তা কি নিয়েমে?

উত্তরঃ অভিাভাবক ফকীর হলে ইনসাফের ভিত্তিতে নিতে পারবে।  আর তা হল-একজন নিপেক্ষ ও সুবিবেচক ব্যক্তি যে পরিমাণ গ্রহণ করাকে ন্যায্য মনে করবেন এবং তা গোপনে নয় বরং প্রকাশ্যে নিতে হবে এবং হিসাব রাখতে হবে।

১৩. মিরাসের ব্যাপারে আইনগত নির্দেশ কয়টি ও কি কি?

উত্তরঃ মোট ৫টি।  ১. মিরাসে মেয়েদের অধিকার।  ২. মিরাস কম হলেও বন্টিত হবে।  ৩. স্থাবর অস্থাবর সব সম্পত্তি বন্টনের আওতায়।  ৪. মিরাসে অধিকার আসে মৃত্যুর পর।  ৫. নিকটাত্মীয়ের উপস্থিতি দুরের আত্মীয় মীরাস লাভ করবেনা।

১৪. মৃত স্ত্রীর সম্পদে স্বামীর অংশ কি রূপ?

উত্তরঃ স্ত্রী নিঃসন্তান হলে সম্পদের অর্ধেক আর সন্তান থাকলে চার ভাগের একভাগ।

১৫. মৃত স্বামীর সম্পদে স্ত্রী বা স্ত্রীদের অংশ কি রূপ?

উত্তরঃ নিঃসন্তান স্বামীর ক্ষেত্রে চার ভাগের একভাগ।

১৬. ল্লাহ নির্ধারিত সীমা রক্ষাকারী ও লংঘনকারীর শাস্তি কি কি?

উত্তরঃ জান্নাত এবং আগুন।

১৭. ল্লাহর নিকট তাওবা করার অধিকার কাদের?

উত্তরঃ অজ্ঞতা বশতঃ যারা খারাপ কাজ করে এবং দ্রুত তাওবা করা।

১৮. তাওবা কাদের জন্য নয়?

উত্তরঃ যারা লাগাতার খারাপ কাজ করতে থাকে এবং মৃত্যুর সময় তওবা করে এবং যারা মৃত্যুর সময় পর্যন্ত কাফের থাকে।

১৯. ল্লাহ কতক্ষণ পর্যন্ত তাওবা কবুল করেন-হাদীসের আলোকে জবাব দাও।

উত্তরঃ إن اللهيقبل توبةَ العبدِ مالم يَغَرْغَرْ  আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার তাওবা কবুল করতে থাকেন, যতক্ষণ মৃর্ত্যুর  আলামাত দেখা না দেয়।

২০. জোর পূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হওয়া বলতে কি বুঝায়?

উত্তরঃ স্বামীর মৃত্যুর পর বিধবাকে মীরাসী সম্পত্তি মনে করে তার অভিভাক ও ওয়ারিস হয়ে বসা।  অন্যত্র বিয়ের ক্ষেত্রে অন্তরায় সৃষ্টি করা।

২১. তালাক সম্পর্কে ২টি হাদীস বলুন।

উত্তরঃ . أبغض الحلال إلى الله الطلاق আল্লাহর নিকট সবচে অপছন্দনীয় হালাল হচ্ছে তালাক এবং  ২. تزوجوا ولا تطلقوا فإن  الله لايحب الذواقين والذواقات  বিয়ে কর এবং তালাক দিওনা।  কারণ আল্লাহ এমন সব নারী পুরুষকে ভালবাসেন না, যারা ভ্রমরের মত ফুলে ফুলে মধু আহরণ করে বেড়ায়।

২২. কেন ধরনের যিনাকারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড?

উত্তরঃ মুহরিম আত্মীয়ের মধ্যে যিনাকারী।

২৩. দুধ সম্পর্ক বিষয়ে হাদীসের বক্তব্য কি? কত বছর পর্যন্ত দুধ পান করলে দুধ সম্পর্ক বলে বলে গন্য হয়?

উত্তরঃ يَحْرُمُ من الرضاع ما يحرم من النسب  . বংশ ও রক্ত সম্পর্কের দিক দিয়ে যা হারাম দুধ সম্পর্কের দিক দিয়েও তা হারাম।   . আড়াই বছর।

২৪. পরস্পর আত্মীয়া দুই মহিলাকে এক সাথে বিয়ে করার ব্যাপারে মূলনীতি কি?

উত্তরঃ এমন ধরনের ২ মেয়েকে এক সাথে বিয়ে করা হারাম, যাদের যে কোন একজন পুরুষ হলে অন্য জনের সাথে বিয়ে করা হারাম হত।

২৫. একজন সৈনিক কখন একজন যুদ্ধ বন্ধি মহিলার মালিক হতে পারেপ্রকৃত মালিক কে?

উত্তরঃ যুদ্ধ বন্দি মহিলার প্রকৃত মালিক সরকার।  সরকার সৈন্যদের মধ্যে বন্টন করে দেবার পর সৈনিক মালিক হতে পারে।

২৬. বিবাহের মোহরানাকে কুরআনে ক’টি ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে এবং কি কি?

উত্তরঃ ২টি ভাষায়।  ১. সাদাকা।  ২. আজর।

২৭. ولا تقتلوا أنفسكم বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

উত্তরঃ . অন্যের সম্পদ আত্মসাৎ করা মানে নিজেকে ধ্বংস করা।  ২. পরস্পকে হত্যা না করা।  ৩. আত্মহত্যা না করা।

২৮. জুলুম, ফিসক এবং ফুজুরের মধ্যে পার্থক্য কি?

উত্তরঃ জুলুমঃ অধিকার হরণ। যেমন-শিরক।  ফিসকঃ যার অপর পরিভাষা-মাসিয়াত।  আল্লাহর আদেশ নিষেধের পরওয়া না করা।  ফুজুরঃ যে সমস্ত সম্পর্কের সুস্থতা ও বলিষ্টতার উপর মানব জীবনের শান্তি ও নিরাপত্তা নির্ভর করে, তা ছিন্ন ও বিকৃত করা।

২৯. “কাওয়াম” শব্দের অর্থ কি? কুরআনে কাদেরকে কাওয়াম বলা হয়েছে?

উত্তরঃ কাওয়াম মানে দায়িত্বশীল-কর্তা-যিনি ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা ব্যবস্থাপনার যাবতীয় বিষয় সঠিক ভাবে হেফাজত , তত্ত্বাবধান ও পরিচালনা করতে পারেন। কুরআনে পুরুষদের কাওয়াম বলা হয়েছে।

৩০. হাদীসে সর্বোত্তম স্ত্রীর কয়টি গুণ বলা হয়েছে এবং তা কি কি?

উত্তরঃ ৩টি।  ১. দেখলে স্বামীর মন ভরে যায়।  ২. স্বামীর অনুগত।  ৩. স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্বামীর ধন-সম্পদ ও নিজের হেফাজত কারী।

৩১. অবাধ্য স্ত্রীকে বাধ্য করার জন্য কয়টি কাজ ও কি কি?

উত্তরঃ ৩টি কাজ।  ১. বুঝানো।  ২. আলাদা শয়ন।  ৩. মারধর।

৩২. স্ত্রীদের প্রহারের ক্ষেত্রে নবী সা. এর নির্দেশ কি?

উত্তরঃ ১. মুখে বা চেহারায় মেরোনা।  ২. নির্দয় ভাবে মেরোনা।  ৩. শরীরে দাগ পড়ে এমন জিনিস দিয়ে মেরো না।

৩৩. স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া মিমাংসা সালিশ কখন বিবাহ বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত দিতে পারে?

উত্তরঃ ১. যখন স্বামী-স্ত্রী এ এখতিয়ার দিয়ে সালিশ নিযুক্ত করে।  ২. আদালত যখন সালিশদের ক্ষমতা দেয়।

৩৪. কাদেরকে আল্লাহ ভালবাসেন না-সূরা নিসার বর্ণনার আলোকে জবাব দাও।

উত্তরঃ ১. অহংকারী।  ২. কৃপন।  ৩. মানুষকে কৃপনাতার দিকে উৎসাহ দানকারী।  ৪. আল্লাহ প্রদত্ত অনুগ্রহকে গোনকারী।  ৫. লোক দেখানো ব্যয় কারী।

৩৫. মদ সম্পর্কে কুরআনের পর্যায়ক্রমিক নির্দেশ কয়টি। কুরআনের কোন কোন স্থানে তা বর্ণিত হয়েছে?

উত্তরঃ মোট ৩টি। ১ম নির্দেশঃ মদ খারাপ জিনিস, আল্লাহ এটি পছন্দ কবেন না। (বাকারা-২১৯), ২য় নির্দেশঃ নেশাগ্রস্ত অবস্থায় নামাযের কাছে যেওনা। (নিসা-৪৩১), ৩য় নির্দেশঃ মদ হারাম। (মায়েদা-৯০-৯১)।

৩৬. নেশাগ্রস্থ অবস্থায় নামায না পড়ার নির্দেশ কোন সূরায়, কখন নাযিল হয়?

উত্তরঃ সূরা নিসায়, ৪র্থ হিজরীর প্রথম দিকে।

৩৭. জিবত কি? জিবত সম্পর্কে হাদীসে কি বলা হয়েছে?

উত্তরঃ জিবত কুসংস্কার।  যেমনঃ যাদু, টোনা, টোটকা, ভাগ্য গননতা, জ্যোতিষ ইত্যাদি।  হাদীসে বলা হয়েছে-النيماقة الطرق ولطير من الجبت  পশুর ধনী, মাটির উপর পশুর পদচিন্ন হাত ভাগ্য গননা কাল্পনিক সৌভাগ্য দূর্ভাগ্য গননা জিবতের অন্তর্ভক্ত।

৩৮. দুনিয়ার নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব কিভাবে অর্জিত হয়?

 

উত্তরঃ আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান লাভ এবং সে জ্ঞান অনুযায়ী কাজ করার মাধ্যমে।

লেখাটি আপনার ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
আমার বই নোট লেখালেখি