আমাদের সীমাহীন ব্যস্ততা ও সাংগঠনিক কাজের সমন্বয়

আমাদের সীমাহীন ব্যস্ততা ও সাংগঠনিক কাজের সমন্বয়

      আলোচনার এই নোটটি প্রবাসী ভাইদের উদ্দেশ্যে তৈরী করা হয়েছে। বিধায়, প্রবাসী নন এমন পাঠকদেরকে বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে পাঠ করতে হবে। যান্ত্রিক সমস্যার কারণে আরবী টেক্সট কোন কোন ক্ষেত্রে উল্টাপাল্টা দেখাতে পারে। তাই মূল গ্রন্থ থেকে সঠিক টেক্সট গ্রহণ করার অনুরোধ করছি। 

ভূমিকাঃ

§  আল্লাহার রাসূল সা. বলেছেনঃ ৫টা জিনিসকে ৫টা জিনিসের পূ্র্বে গনিমত মনে করতে

اغتنم خمساً قبلَ خمسٍ، شبَابَكَ قبلَ هرمَكَ، وصِحَّتِكَ قبلَ سُقْمِكَ، وغِنَاكَ قبلَ فَقْرِكَ، وفَرَاغِكَ قبلَ شُغُلِكَ، وحيَاتَكَ قبلَ مَوْتِكَ.

পাঁচটি জিনিসকে পাঁচটি জিনিসের পূর্বে মহামূল্যবান বলে মনে করবে

. বার্ধক্যের পূর্বে তোমার যৌবনকে

. রুগ্ন হয়ে পড়ার পূর্বে তোমার সুস্থতাকে

. দরিদ্র হয়ে যাবার পূর্বে তোমার স্বচ্ছলতাকে

. ব্যস্ত হয়ে পড়ার পূর্বে তোমার অবসর সময়কে এবং

. মৃত্যু আসার পূর্বে তোমার জীবনকালকে

§  আল্লাহর রাসূল সা. অন্য হাদীসে জানিয়েছেন যে, ৫টি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোন আদম সন্তান কিয়ামতের দিন পা নাড়াতে পারবেনা।  

لاَ تَزُولُ قدمَا ابنِ آدمَ حتى يُسئَلَ عن خمسٍ عن عُمْرِهِ فيما أَفْنَاهُ وعن شَبَابِهِ فيما أَبْلاَهُ وعن مالِهِ مِنْ أَيْنَ اكْتَسَبَهُ وفيما اَنْفَقَهُ وما عَمِلَ فيما عَلِمَ.

“কিয়ামতের দিন আদম সন্তানের পা একবিন্দু নড়তে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত তার নিকট এই পাঁচটি বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা না হবে”।

১. নিজের জীবনকাল সে কোন কাজে অতিবাহিত করেছে?

২. যৌবনের শক্তি সামর্থ কোথায় ব্যয় করেছে?

৩. অন-সম্পদ কোথা হতে উপার্জন করেছে?

৪. কোথায় তা ব্যয় করেছে। এবং

৫. সে (দ্বীনের) যতটুকু জ্ঞানার্জন করেছে, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছে তিরমিযি)

§  কবি ফররুখ বলেছেনঃ “নহে সমাপ্ত কর্ম মোদের-অবসর কোথা বিশ্রামের, উজ্জল হয়ে ফুটেনি আজো-সুবিমল জ্যোতি তাওহীদের।”

§  ব্যস্ততা রহমত। কারণ “অলস মস্তিস্ক শয়তানের আডডা খানা।”

§  ব্যস্ততাকে হজম করে সত্য ও সুন্দরের প্রচার ও প্রসারের যে জিম্মাদারী আমরা গ্রহণ করেছি, তাকে তার কাংখিত মনজিলে পৌছানোর জন্য সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে কোন ‘যদি’ ্এর আশ্রয় নেয়া যাবেনা।

فلا تقل: لو إني فعلت كذا وكذا. ولكن قل: قدر الله، وما شاء فعل. فإن لو تفتح عمل الشيطان

§  কাজকে বলুন আমার নামায আছে। ব্যস্ততাকে বলুন আমার সাংগঠনিক কাজ আছে।

§  সত্য ও কল্যাণের পথে আহবানের এ সংগ্রামে সর্বশেষ সময় পর্যন্ত দৃঢ়পদে ঠিকে থাকার সিদ্ধান্তে অনড় থাকতে হবে।

আলোচনার উদ্দেশ্যঃ

§  আমাদের সাংগঠনিক কাজ আছে।

§  আমাদের সীমাহীন ব্যস্ততা আছে।

§  এই সীমাহীন ব্যস্ততার কারণে সাংগঠনিক কাজ বাঁধাগ্রস্থ হচ্ছে।

§  আমরা ব্যস্ততাকে ইচ্ছা করে নিয়ে আসিনি যে ইচ্ছা করলেই তা থেকে মুক্তি পেয়ে যাবো।

§  ব্যস্ততাকে বাস্তবে উপেক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না বিধায় ব্যস্ততা সাংগঠনিক কাজে বাঁধা হয়ে দাড়িয়েছে।

§  আমাদের আলোচ্য ব্যস্ততাকে বন্ধ করে নয় বরং ব্যস্ততা আর সাংগঠনিক কাজকে কিভাবে সমন্বয় করবো।

§  আমাদের আলোচনা ধারাবাহিকতাঃ

১. আমাদের সাংগঠনিক কাজ সমূহ কি কি?

২. আমাদের ব্যস্ততা কি কি?

৩. আমরা কিভাবে এই দূইটির মাঝে সমন্বয় করবো?

আমাদের সাংগঠনিক কাজ সমূহঃ

১. দৈনিক কাজ।

২. পরিকল্পিত কাজ।

৩. আকস্মিক কাজ।

    দৈনিক কাজ

১. কুরআন অধ্যয়ন।

২. হাদীস অধ্যয়ন।

৩. ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন।

৪. জামায়াতে নামায।

    পরিকল্পিত কাজ

১. টার্গেট সাক্ষাৎ।

২. সাংগঠনিক যোগাযোগ।

৩. বৈঠকে যোগদান/সফর।

৪. পাঠচক্র বা টিসি টিএস এর নোট।

    আকস্মিক কাজ

১. সাংগঠনিক কর্মসূচীর বাস্তবায়ন।

২. সামাজিক কাজ।

৩. সাংগঠনিক সামাজিকতা ।


আমাদের ব্যস্ততাঃ

১. বাধ্যতামূলক ব্যস্ততা।

২. ঐচ্ছিক ব্যস্ততা।

৩. পারিবারিক ব্যস্ততা।

৪. সৃষ্ট ব্যস্ততা।

    বাধ্যতামূলক ব্যস্ততা

      ১. ডিউটি সংক্রান্ত ব্যস্ততা।

      ২. ঘুমানো বা বিশ্রামের ব্যস্ততা।

      ৩. নামাযের ব্যস্ততা।

      ৪. কাপড় ধোয়ার ব্যস্ততা।

      ৫. সেইভ করার ব্যস্ততা।

      ৬. নোঁখ ছোট করার ব্যস্ততা।

      ৭. খাবার তৈরী করার ব্যস্ততা।

    পারিবারিক ও সামাজিক ব্যস্ততা

      ১. পরিবার, স্ত্রী, সন্তান নিয়ে ব্যস্ততা।

      ২. কাতারের আত্মীয় স্বজন ও সামাজিকতা।




    ঐচ্ছিক ব্যস্ততা

      ১. টিউশন বা অভারটাইম বা ব্যবসার ব্যস্ততা।

      ২. দেশে ফোন করার ব্যস্ততা।

      ৩. দেশের সমস্যা সমাধান করার ব্যস্ততা।

      ৪. কাতারের আত্মীয় স্বজন সংক্রান্ত ব্যস্ততা।

      ৫. সামাজিক সংগঠন সংক্রান্ত ব্যস্ততা।

      ৬. অসুস্থতা/শরীর চর্চা জনিত ব্যস্ততা।


    সৃষ্ট ব্যস্ততা

      ১. মানসিক টেনশনের কারণে ব্যস্ততা।

      ২. অলসতার কারণে ব্যস্ততা।

      ৩. মানসিক ব্যস্ততা।

      ৪. টিভি দেখার ব্যস্ততা।

      ৫. ফেইসবুক, ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ততা।

আসুন সমন্বয় করি

আমাদের সাংগঠনিক কাজঃ

দৈনিক কাজ

১. কুরআন অধ্যয়ন।

২. হাদীস অধ্যয়ন।

৩. ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন।

৪. জামায়াতে নামায।

§  উপরের কাজগুলোকে আমি সাংগঠনিক কাজ এজন্য বলেছি যে এই গুলো আমাদের ব্যক্তিগত রিপোর্ট বইয়ের মাঝে রয়েছে। কিন্তু বাস্তবে এগুলো আমার দৈনন্দিন ব্যক্তিগত কাজ। ডিউটি, ঘুম ও খাওয়ার মতো নিত্যদিন করণীয় কাজ সমূহের অন্তর্ভূক্ত।

§  আল্লাহর সাথে যথাযথ সম্পর্ক রক্ষার জন্য কুরআন হাদীস ও সাহিত্য অধ্যয়ন একটি অন্যতম মৌলিক কাজ।

§  কুরআন হাদীস অধ্যয়নের ক্ষেত্রে কনসিডার নাই। সময় করে পড়ে নিতে হবে।

§  তাফহীম, বাংলা হাদীস, ইসলামী সাহিত্য সব এখন মোবাইলে বা অনলাইনে পাওয়া যায়।

§  ব্যস্ততার ফাঁকে অধ্যয়ন সেরে নিতে হবে।

§  জামায়াতে নামাযের ব্যাপারে কোন কনসিডারের সুবিধা নাই। ওটা নিজ দায়িত্বে করে নিতে হবে। ডিউটি অন্তরায় হলে ঐ ডিউটিকে তালাক দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

§  মুদীর বা কর্মকর্তার উপর প্রভাব ফেলতে হবে। তাকে নিজের মতো করে গড়ে তুলতে হবে।

পরিকল্পিত কাজ

১. টার্গেট সাক্ষাৎ।

২. সাংগঠনিক যোগাযোগ।

৩. বৈঠকে যোগদান/সফর।

৪. পাঠচক্র বা টিসি টিএস এর নোট।

§  পুরো মাসের পরিকল্পনাকে ডেইটওয়াইজ সাজানো এবং সংশ্লিষ্টের সাথে কনফার্ম করা।

পুরো মাসের সাংগঠনিক কাজ তারিখ ভিত্তিক সাজিয়ে সংশ্লিষ্টের সাথে তারিখ, সময়, স্থান ঠিক করে ফেললে তা আর না করাথাকেনা।

মাওলানা মওদূদীর সুরে মিলায়ে বললেঃ সংগঠনের কাজ করার বাসনা থাকলেই যথেষ্ট নয়, বাস্তব সম্মত উদ্যোগ থাকতে হবে।

§  কিছু কাজের জন্য চ্যালেঞ্জ গ্রহণ। যেমনঃ একজন ভাই আছেন, যাকে পাঠচক্রের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। উনি বলেছেনঃ আমাকে কেন দাওয়াত দিলেন? আমাকে আর কখনো দাওয়াত দেবেন না। কারণ ওটাই আমার সাংগঠনিক কাজ। আমি সংগঠনের সাথে থাকলে অন্যজন কেন আমাকে স্মরণ করে দেবে? আপনি ও চ্যালেঞ্জ দিনঃ
১. আমাকে কর্মপরিষদ বা পরামর্শ সভার বৈঠকে বৈঠকের দাওয়াত দিতে হবেনা।

২. আমাকে সদস্য বৈঠকের দাওয়াত দিতে হবেনা। আমাকে সিডিউল কোন বৈঠকের দাওয়াত দিতে হবে না।

৩. আমাকে সফর মনে করে দিতে হবেনা।

§  সকল এপোয়েন্টম্যান্টকে রিমাইন্ডারের অধীনে নিয়ে আসা। যেমনঃ

মোবাইলে রিমাইন্ডার সেট করা। 

প্রতিদিন ঘুমুতে যাবার আগে পরের দিনের পুরো কাজকে চিরকূটে নোট করা।

– গুগুল ক্যালেন্ডার মোবাইলে ডাউনলোড করে সেখানে প্রোগ্রাম সমূহ নোট রাখা এবং নোটিফিকেশন একটিভ করে রাখা। সকল এপোয়েন্টম্যান্টকে রিমাইন্ডারের অধীনে নিয়ে আসা। যেমনঃ মোবাইল ক্যালেন্ডারে এপোয়েন্টম্যান্ট ও প্রোগ্রাম নোট করুন। তখন আপনার অবসর দিন গুলো ক্যালেন্ডারে ঝকঝক করবে। আপনার হাতের মুঠোর টেকনলজিকে ব্যবহার আপনি ফায়দামন্দ হতে পারবেন।

আকস্মিক কাজ

১. সাংগঠনিক কর্মসূচীর বাস্তবায়ন।

– জরুরী পরিষদ বৈঠক, কেন্দ্র থেকে সার্কূলার নিয়ে আসুন, অমুক জায়গায় মেহমান যেতে পারছেন না তাই বিকল্প হিসাবে আপনি, জরুরী কর্মপরিষদ বৈঠক ইত্যাদি ইত্যাদি।

২. সামাজিক কাজ।

– সামাজিক সংগঠনের প্রোগ্রাম, রুগী দেখতে যাওয়া, জানাযায় যাওয়া, প্রতিবেশী বা দেশ গ্রামের লোকের সাথে যোগাযোগ।

৩. সাংগঠনিক সামাজিকতা।

– রাস্তায় আটকে পড়াকে উদ্ধারে যাওয়া।

এয়ারপোর্টে বা হসপিটালে নিয়ে যাওয়া/আনতে যাওয়া।

চাকুরীর জন্য কোন কর্মস্থলে ইন্টারভিউর জন্য নিয়ে যাওয়া।

§  উপরের আকস্মিক কাজগুলোর জন্য আমাদের কাছে সময় বরাদ্ধ থাকেনা।

§  উপরের কাজগুলো আমাদের স্বাভাবিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃশ্যতঃ অন্তরায় হিসাবে কাজ করে।

§  উপরের কাজগুলোর কারণে আমাদের রিপোর্টে বাস্তবায়নের হার কখনো ১০০% হয়না।

§  আমাদের পক্ষে পরিকল্পনার ১০০% বাস্তবায়ন করা কখনো সম্ভব নয়। কিন্তু আমরা দূর্বল ছিলাম না-এটা প্রমাণ দিতে হবে।

§  উপরের কাজ গুলো পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অন্তরায় হিসাবে কাজ করলেও ঐসব কাজ সংগঠনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ও বরকতময় কাজ। এই সব কাজের সূদূর প্রসারী ফলাফল রয়েছে।

§  রাত সাড়ে ১২টায় একজন ফোন করলো-গাড়ী আটকে পড়ার কারণে বা এয়ারপোর্ট থেকে। আপনি টেলিফোন ধরেই বললেনঃ এখন টেলিফোন করার সময় হলো

আপনাকে মনে রাখতে হবেঃ

১. পরিষদের অনেক অনেক সদস্য থাকতে আপনাকে কেন তিনি বাঁছাই করলেন?

২. আপনার প্রতি তার আস্থাকে মুল্যায়ন করতে হবে।

৩. একজন ভাইকে লিফট দেয়া, রোগী দেখতে যাওয়া, বিপদের মূহুর্তে সাহায্য করা, বিপদ শুনে দেশে যাওয়ার সময়ে বিদায় জানাতে হাজির থাকা, বিপদে সমবেদনা জানানো ইত্যাদি কাজ ঐ ব্যক্তির পিছনে ৩মাস কাজ করার চেয়ে ফলদায়ক। 

তাই উপরের কাজগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে করতে হবে। আর এই সময়টাকে আপনি কোন একদিকে সমন্বয় করে স্বাভাবিক পরিকল্পনাকে শতভাগ বাস্তবায়নের চেষ্টা করতে হবে।

 

আমরা এতক্ষণ আমাদের সাংগঠনিক কাজ গুলোর গুরুত্ব ও তা সম্পাদনের উপায় নিয়ে কথা বললাম। এ পয্যায়ে আমরা আমাদের ব্যস্ততা নিয়ে কথা বলবো। আমরা চেষ্টা করবো এখান থেকে কিছু সময় বের করে নিতে, যাতে করে ঐ সময়টাকে আমরা সাংগঠনিক কাজে লাগাতে পারি।

তবে সর্বক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে যে, সময়টাকে পরিকল্পনা ভিত্তিক কাজে লাগানোর অভ্যাস গড়ে তুলতে না পারলে সময় কোন দিকে ঘোড়ার গতিতে চলে যাবে তা আমরা টেরই পাবোনা।

আমাদের ব্যস্ততাঃ

বাধ্যতা মূলক ব্যস্ততা

§  এই সব ব্যস্ততায় হাত না দিয়ে ঐ ব্যস্ততা থেকে একটু সময় বের করতে হবে।

§  ব্যস্ততার মাঝে কাজের অভ্যাস করতে হবে।

§  আমরা প্রয়াস চালাবো ঐসব ব্যস্ততার মাঝে সাংগঠনিক কাজ কিভাবে করবো।

§ ডিউটি সংক্রান্ত ব্যস্ততা।

§  ডিউটি করার জন্য আমরা প্রবাসে এসেছি। ডিউটি না করলে প্রবাসে থাকতে পারবোনা। বিধায় এটাকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিতে হবে।

o     فَإِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانتَشِرُوا فِي الْأَرْضِ وَابْتَغُوا مِن فَضْلِ اللَّهِ وَاذْكُرُوا اللَّهَ كَثِيراً لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ

 তারপর যখন নামায শেষ হয়ে যায়, তখন জমীনের ছড়িয়ে পড় এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো এবং অধিক মাত্রায় আল্লাহকে স্মরণ করতে থাকো। আশা করা যায় তোমরা সফলকাম হবে।” (জুমুয়াঃ ১০) 

§  ডিউটির নেচার কি? ডিউটিতে থেকে অধ্যয়ন বা টেলিফোন যোগাযোগের সুযোগ থাকলে কাজে লাগানো।

§  ডিউটিতে যাওয়া ও আসার পথের সময় গাড়ীতে বা বাসে বসে কাজে লাগানো। যেমনঃ গাড়ীতে বসে দেশে টেলিফোন করা কাজটা সেরে নিতে হবে, সাথে ব্ধ্যই রাখার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এবং গাড়ীতে অধ্যয়নের কাজ সেরে নিতে হবে ইত্যাদি।

§  কিছু ইনফরমেশন-যা পৌছানোর জন্য আপনি দায়িত্ব প্রাপ্ত। সেই সব ইনফরমেশন ডিউটির ফাঁকে ফাঁকে সময় করে পৌছে দেয়া।

§  ডিউটি স্থলের লোকদের দাওয়াতী টার্গেট নেয়া।

§  ডিউটিতে যাওয়া আসার সময়টাকে দাওয়াতী কাজে ব্যবহার।

§  ডিউটিতে যাওয়ার সময়ে বই পড়া।

§  ডিউটির পর বাঁচা সময়কে পরিকল্পিত ব্যবহার।

§  ডিউটি নিয়ে এতো ব্যস্ত-নিজে একটু সুখ করবেন, সেই সুযোগ নাই-ঘুমানোর পর্যন্ত টাইম নাই। এমন হওয়া উচিত নয়।

§  অনেক কণ্ট্রাক্টর নিজের সুখকে বিসর্জন দিয়ে পয়সা রুজি করছেন। মাত্র হাজার বারোশ রিয়াল দিয়ে আপনি আপনার অর্ধেক ব্যস্ততা কমিয়ে নিতে পারেন।

§  আমাদের ভাইদের একটা ভাল রেস্টুরেন্ট নাই, একটা ভাল হোটেল নাই, একটা ভাল কাপড়ের দোকান নাই, একটা ভাল সুপার মার্কেট নাই, একটা ভাল ইলেক্ট্রনিক শো-রোম নাই কেন? তাহলে কি নিয়ে এতো ব্যস্ত? যারা কম ব্যস্ত থাকে, তারা এই সব করতে পেরেছে।

§  আমাদের ২জন সদস্য ভাই একটা কোম্পানী চালান। একজন অফিস, মাল ক্রয়, এগ্রিমেন্ট ইত্যাদি দেখেন। অন্যজন সাইট দেখেন। সাইটে পরিচালনার পাশাপাশি তিনি নিজে কাজ করেন। টায়ার্ড হয়ে যান। ফলে বিকালে সময় দিতে পারেন না। এখানে সাইটে কাজ না করে সুপারভাইজার হিসাবে থাকুন। আপনি যে কায়িক পরিশ্রম করবেন, তার স্থলে আরো ২জনকে নিয়োগ দিয়ে আপনি সুপারভাইজিং করুন। আপনার ইনকাম বাড়বে, আপনি ক্লান্ত হবেন না, আপনার এই পদ্ধতির কারণে আরো ২জন মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

§  যারা ১৮ ঘন্টা ডিউটি করেন, তারা এখন থেকে ১৯ ঘন্টা ডিউটি হলে কি চাকুরী ছেড়ে দেবেন? উত্তর হলোঃ দেবেন না। তাহলে সংগঠন ঐ ১ঘন্টা সময় আপনার কাছ থেকে চায়।

§  সমন্বয়ঃ অধ্যয়ন, সাংগঠনিক যোগাযোগ, দাওয়াতী টার্গেট, সময়দান।

§ ঘুমানোর ব্যস্ততা।

§  এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ জিনিস। ওটা ঠিক মতো না হলে শরীর ও মন ভাল থাকেনা।

o     وَجَعَلْنَا نَوْمَكُمْ سُبَاتاً [النبأ : 9]

বিশ্রাম কাজের অংশ একসাথে গাঁথা, নয়নের অংষ যেন নয়নের পাতা।

§  কতক্ষণ ঘুমাবেন? অতিরিক্ত না ঘুমানো। সর্বমোট ৬ ঘন্টার বেশী অবশ্যই না।

§  জোহর থেকে আসর ১ঘন্টা ঘুমানো। এই সময়কে পরিকল্পিত ব্যবহার করুন।

§  রাতে ও বাদ ফজর মিলিয়ে ৬ঘন্টা ঘুমালে দুপুরে ঘুমের দরকার নাই।

§  সাংগঠনিক ব্যস্ততা ছাড়া রাতের ঘুম নির্দিষ্ট সময়ে শুরু করা।

§  সমন্বয়ঃ ঘুমকে একটু কমাতে পারলে এবং দূপুরে ১ঘন্টার বেশী না ঘুমালে এখানে আপনি ১ঘন্টা সময় পাচ্ছেন-যা অধ্যয়ন বা যোগাযোগে লাগাতে পারেন।

§ নামাযের ব্যস্ততা।

o     إِنَّ الصَّلاَةَ كَانَتْ عَلَى الْمُؤْمِنِينَ كِتَاباً مَّوْقُوتاً [النساء : 103]

o     قلبه معلق بالمساجد

§  নির্দিষ্ট মসজিদে নামায আদায় করুন।

§  নামাযের আগে পরের সময়কে দাওয়াতী কাজে বা জনশক্তি যোগাযোগের কাজে লাগান।

§  নামাযের সময় কুরআন তিলাওয়াত।

§  নামাযে কুরআন তেলাওয়াত।

§  মসজিদের একই স্থানে বসা। ওখানে দাওয়াতী টার্গেট নেয়া।

§  সমন্বয়ঃ নামাযের সুযোগে দাওয়াতী কাজ ও সাক্ষাৎ হয়ে যাচ্ছে।

§ কাপড় ধোয়া, সেইভ করা ও নোঁখ ছোট করার ব্যস্ততা।

o     الطهور شطر الإيمان

 

§  সপ্তাহের একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করা।

§  সেইভ নিজে নিজে না করে সেলুনে করা।

§  সেলুনে যাওয়ার সময় বই সাথে রাখা-কারণ সেলুনে গিয়েই আপনি সিরিয়্যাল পাবেন না। ওয়েটিং এর সময়টাকে কাজে লাগাতে হবে।

§  নিজে ইস্ত্রি করলে সপ্তাহে ১দিন করা।

§  কাপড় বেশী রাখা।

§  সমন্বয়ঃ কাপড় বেশী রাখা এবং সপ্তাহে একদিন এই সব কাজে ব্যয় করাতে সময় বাঁচবে-ব্যস্ততা কমবে।

§ খাবার তৈরী করার ব্যস্ততা।

o     كُلُواْ وَاشْرَبُواْ مِن رِّزْقِ اللَّهِ [البقرة : 60]

§  অনেকের ফ্যামিলী থাকার কারণে খাবার তৈরীর ব্যস্ততা নাই।

§  ব্যাচেলর হলেও  পাক করতে হয়না এমন অনেকে আছেন।

§  মেসে অন্যদের সাথে খাওয়া-যাতে দৈনিক পাক করার ব্যস্ততা না থাকে।

§  মেসের পাকের সিডিউল ফ্লাক্সিবল থাকা। প্রোগ্রাম হলে অলটারনেটিভ দেয়া।

§  নিজে পাক করে খেলে একাধিক আইটেম ১দিনে পাক করা এবং ৪দিনে খাওয়া।

§  রাতে খবুজ তথা রুটি খাওয়ার অভ্যাস করা।

§  খাবারের আইটেমে ফ্রুট ও সালাত সংযোজন এবং তা খাবার শুরুর আগে খাওয়া,  যাতে ভাত বা রুটি আপনাকে কম খেতে হয়।

§  খাবারকে শিল্প না বানানো। বরং বাঁচার জন্য খাবার।

§  পাক ও খাবারের জন্য সময় বরাদ্ধ। কোন অবস্থায়ই এর চেয়ে বেশী সময় না দেয়া।

§  সমন্বয়ঃ খাবার তৈরীর কাজে এই পদ্ধতি আপনার অনেক সময় বাঁচাবে।

ঐচ্ছিক ব্যস্ততা

§  এই সব ব্যস্ততায় হাত দিতে চাই। তবে একদম বন্ধ করতে চাইনা।

§  ব্যস্ততার মাঝে কাজের অভ্যাস করতে হবে।

§  আমরা প্রয়াস চালাবো ঐসব ব্যস্ততার মাঝে সাংগঠনিক কাজ কিভাবে করবো-তার প্রতি আলোকপাত করতে।

§ টিউশন বা অভারটাইমের ব্যস্ততা।

§  মূল ডিউটির অতিরিক্ত যা করা হয়,তা অভারটাইম।

§  প্রবাসে এসেছি পয়সা রুজির জন্য, তাই যে ভাবেই সম্ভব হালাল রুজি রোজগার করা দরকার।

§  যে যত বেশী রোজগার করবেন, তিনি সংগঠনকে ততবেশী সহযোগিতা করতে পারবেন।

§  বেশী পাওয়ার মানসিকতা বা প্রতিযোগিতা কিন্তু মারাত্মক।

§  চাকুরী আছে। কিন্তু চাকুরীর পরে সুযোগ মতে ড্রাইভিং করি, কিংবা কন্ট্রাক্টিং করি, ঘর ভাড়া ব্যবসা করি অথবা টিউশনি করি-তাহলে এতো টাকা পয়সা রোজগারের পর সুখ বা ভোগ কখন করবো? যা রুজি করবো, তা ভোগ করার জন্যও আমার সময় দরকার।

§  কিছু অভারটাইম বাধ্যতা মূলক, কিছু অভারটাইম ঐচ্ছিক-ঐচ্ছিক অভারটাইমকে আমরা প্রয়োজনে বাদ দিতে পারি।

§  অভারটাইম আর অতিরিক্ত ডিউটি এক জিনিস নয়-বিধায় অতিরিক্ত ডিউটিকে অভারটাইম বলবেন না।

§  অনেক কন্ট্রাকটর আছেন, যারা-নিজে লেবার নিজে ডাইভার নিজে আমিল নিজে মার্কেটিং ম্যানেজার-এটা থেকে বের হয়ে আসতে হবে।

§  টিউশনের সময়সূচীকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসুন।

§  সপ্তাহে ৬দিন টিউশন না করে নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে আসুন-সপ্তাহে ৪দিন টিউশনি করুন।

§  টিউশনীতে নিজস্ব একটা মর্যাদা বা ডিগনিটি থাকা দরকার। 

§  নিজের বাসায় টিউশনী করার ব্যবস্থা করুন, গ্রুপ তৈরী করে টিউশনি করুন।

§  সাংগঠনিক প্রোগ্রামকে সামনে রেখে অতিরিক্ত ডিউটিকে সাজিয়ে নিন।

§  অভারটাইম যদি নিজ নিয়ন্ত্রনে হয়, তাহলে সাংগঠনিক প্রোগ্রামের জন্য সময় রেখে টিউশনী করা।

§  সমন্বয়ঃ অভারটাইমকে সমন্বয় করতে পারলে সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ততা বাঁধা হয়ে দাড়াতে পারেনা।।

§ দেশে ফোন করার ব্যস্ততা বা দেশের সমস্যা সমাধানে ব্যস্ততা।

§  যাদের বাবা মা নামক নিয়ামত বর্তমান রয়েছে এবং তারা আপনার স্ত্রী-সন্তানের সাথে থাকনে, তারা দৈনিক ফোন না করা।

§  যারা দৈনিক ফোন করতে হয়, তারা ১০ মিনিটের মধ্যে কথা শেষ করা।

§  সকল সন্তানের সাথে সব দিন কথা না বলে রুটিন অনুযায়ী কথা বলা।

§  সন্তানদের খবর মা থেকে নিয়ে সন্তানদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়েই শেষ করা।

§  পরিবারের সকল বিষয়ে নাক না গলানো।

§  ভাই-বোন-বন্ধু-স্বজনদের সাথে রুটিন মাফিক মাসিক ফোন করা।

§  প্রবাসে এমনও আছেন, যারা গড়ে সর্বনিম্ন ১ঘন্টা কথা বলেন। উপরে ২ আড়াই ঘন্টা পর্যন্ত। এতো কথা কি বলেন, তা আমার বোধগম্য নয়।

§  সমন্বয়ঃ শুধু টেলিফোনের সময়টা বাঁচাতে পারলেই আপনাকে আর চিন্থা করতে হবেনা। সময় আপনি পাবেনই।

§ কাতারের আত্মীয় স্বজন সংক্রান্ত ব্যস্ততা।

§  এই ব্যস্ততাকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা।

§  এমন কিছু ভাই আছেন, যার ভাই বেরাদ প্রবাসে আছেন। এখন উনার বাসায় বৃহস্পতিবারে আসবে উনি উনাদেরকে দিয়ে পার্টি দেয়ার জন্য বৃহস্পতি ও জুমুয়াবার ব্যস্ত। এই ব্যস্ততা পরিহার করতে হবে। আত্মীয়দের খাওয়ানোর নাম সহযোগিতা নয়। আপনি আত্মীয়দের প্রয়োজনে পাশে থাকুন, সহযোগিতা করুন। কিন্তু পার্টি কালচার থেকে বেরিয়ে আসুন।

§  ভাই বেরাদর আত্মীয় স্বজনের জন্য দুই ঈদ এবং ন্যাশনাল ডে বা স্পোর্ট যে বরাদ্ধ করুন। বাকী সময় পরিহার করুন।

§  মনে রাখতে হবে যে, আপনার যদি সেলস ম্যানের ডিউটি হতো, তখন কি আপনি এই ভাবে পার্টি দিতে পারতেন।

§  সমন্বয়ঃ অযথা পার্টি সংস্কৃতি লালন না করে আপনি বিরাট সময় বাঁছাতে পারেন।

§ সামাজিক সংগঠনের ব্যস্ততা।

§  সামাজিক সংগঠনের কাজে একটা রোমান্স আছে। মজা পাওয়া যায়।

§  সামাজিক সংগঠনে জড়িত হলে মিডিয়া কাভারেজ পাওয়া যায়।

§  সামাজিক সংগঠনে জড়িত হলে প্রদর্শনেচ্ছার দোষে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা থাকে।

§  সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সমাজ সেবা ও মানব সেবা করা যায়, যা খুবই ফজিলত ওয়ালা কাজ।

§  সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে সংগঠনের গনভিত্তি তৈরী হয়।

§  সামাজিক সংগঠনে কাজ করার মধ্য দিয়ে সমাজের নেতা হতে হয়।

§  সামাজিক সংগঠনের মানুষ গুলোকে দাওয়াতী টার্গেট নেয়া।

§  সামাজিক সংগঠনে নেতৃত্ব দেয়া-কর্মীত্ব নয়।

§  সামাজিক সংগঠনকে সময় দেয়া মূল সংগঠনকে সময় দেয়ার পর।

§  যে সামাজিক সংগঠন মূল সংগঠনের কোন উপকার করেনা, কেবল ব্যক্তি প্রতিষ্ঠার কাজ করে-তা পরিহার করা।

§  সামাজিক সংগঠনের জন্য আপনার মাসিক বরাদ্ধকৃত সময় কত, তা ঠিক করা এবং সে অনুযায়ী সময় দেয়া।

§  সামাজিক সংগঠনের নামে সামাজিক আডডা পরিহার করা।

§  সামাজিক বা আঞ্চলিক সমিতি সংস্থার কার্যক্রমের জন্য কারো কাছে না গিয়ে নিজের কাছে তাদেরকে নিয়ে আসা।

§  সমন্বয়ঃ সামাজিক সংগঠন নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসে এটাকে সংগঠনের একটি উৎপাদন কেন্দ্র করতে পারলে অনেক লজিষ্টিক সাপোর্ট পাওয়া যায়। যার মাধ্যমে সময় বাঁচে।

§ অসুস্থতা ও শরীরচর্চা জনিত ব্যস্ততা।

§  অসুস্থতার জন্য নিয়মিত দোয়া করা, দোয়া চাওয়া। বিশেষ করে মা-বাবা এবং উস্তাদের দোয়া চাওয়া।

§  অসুস্থতার জন্য নিয়মিত ঔষধ ব্যবহার।

§  অসুস্থতার কারণে কাতর না হয়ে ওটাকে একটি নিয়ামত হিসাবে গ্রহণ করা। অন্য মারাত্মক অসুস্থ ভাইয়ের দিকে নজর দেয়া।

§  দায়িত্বশীলের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে অসুস্থতার ধরণ, ডাক্তারের বাধ্যবাধকতা ইত্যাদি পরিস্কার বর্ণনা করা।

§  শরীর চর্চা নিয়মিত করা। কিন্তু এটাকে ফরয না বানানো। পরিমিত পরিমাণে খাওয়া। কম খাওয়া। সুন্নত অনুযায়ী খাবার গ্রহণ করা।

§ পারিবারিক ও সামাজিক ব্যস্ততা

§  পারিবাকে ও সামাজিক ব্যস্ততা জীবনের অংশ এবং বাস্তবতা। এটাকে সাথে করে নিয়ে চলতে হবে।

§  এপয্যায়ের ব্যস্ততাকে আমরা স্বাগত জানাই, আবার রিবক্তও হই। এ ব্যাপারে আমার অভিজ্ঞতা কম,তাই কম কথা বলাই শ্রেয়।

§ পরিবার, স্ত্রী, সন্তান, আত্মীয় স্বজন ও সামাজিকতা।

 

§  পরিবার আপনাকে জান্নাতে নিতে পারে, আবার জাহান্নামেও নিতে পারে।

§  পরিবার আপনার জন্য বড় একটা চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে।

§  এই ব্যস্ততাকে নিজের নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা।

§  প্রতি জুমুয়াবার পার্টি দেয়ার সংস্কৃতি পরিহার করা।

§  অমুককে খাওয়াতেই হবে এমন মানসিকতা পরিহার করা।

§  অমুকের বাসায় খেয়েছি, অতএব আমাকে খাওয়াতে হবে মানসিকতা পরিহার করা।

§  সামাজিক দাওয়াত আপনার সিডিউলে হবে এমন অবস্থান তৈরী করা।

§  দাওয়াত আপনার সিডিউলে না হলে আপনার সিডিউল বিপর্যয় ঘটবে এমন সামাজিক অনুষ্ঠানে না যাওয়া।

§  স্ত্রী সন্তানদের মাঝে মাঝে পার্কে  বা দর্শনীয় স্থান দেখাতে নিয়ে যাওয়া। এটা পরিবার ও নিজের মানসিক পরিগঠনের জন্য একান্ত প্রয়োজন।

§  স্ত্রী সন্তানদের পার্কে, কর্ণিশে প্রতি সপ্তাহেই বেড়াতেই হবে এমন মানসিকতা পরিহার।

§  আপনার সন্তানের পরীক্ষার কারণে যদি আপনি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পার্কে, মার্কেটে স্বপরিবারে না যান, তাহলে আপনার আখেরাতের পরীক্ষার জন্য তথা আপনার সাংগঠনিক ক্লাশ বা পরীক্ষা বা প্রোগ্রামের জন্য কেন পার্কে যাওয়া বন্ধ থাকবেনা।

§  প্রবাসে নিরাপত্তার বিষয়টাকে নিয়ামত হিসাবে গ্রহণ করে যে কোন পার্কে বাচ্চাদেরকে মায়ের সাথে ছেড়ে আপনি প্রোগ্রামে চলে আসুন। যাওয়ার সময় কোন আকর্ষণী রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার নিয়ে যান। পার্কে বসে খেয়ে নিন। বাসায় গিয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন। সাপও মরবে লাঠিও ভাঙবে না।

§  সকলের কাছে নিজ সন্তান কম বুঝের হয়ে থাকে। মনে করে থাকেন যে, সে কিছুই বুঝে না। বাস্তবে কিন্তু তা নয়। সন্তানকে দিয়ে কাজ করান। ননীর পুতুল না বানিয়ে কাজ শিখান।

§  স্ত্রী এবং সন্তানদের ড্রাইভিং লাইসেন্স দিন। গাড়ী কিনে দিন। এতে আপনার অনেক ব্যস্ততা কমে যাবে।

§  আপনার সন্তানের প্রোগ্রাম আপনার স্ত্রীর প্রোগ্রামের জন্য অন্য ভাইয়ের সাথে সমন্বয় করুন। একজন নিয়ে যান,আরেকজন নিয়ে আসুন। অথবা সাপ্তাহিক সিডিউল করুন।

§  পরিবার যাতে জাহান্নাম না হয়ে জান্নাতের টুকরা হয়, সেজন্য চেষ্টা করুন।

§  সমন্বয়ঃ পরিবারকে সময় দেয়ার ক্ষেত্রে ভারসাম্য না রাখতে পারলে এই পরিবারই আপনাকে সংগঠন থেকে দূরে সরিয়ে নিতে যথেষ্ট।

সৃষ্ট ব্যস্ততা

§  ইতিপূর্বে বলা ব্যস্ততাগুলোকে ডিনাই করিনি,সমন্বয় করেছি।

§  আমরা এ পর্যায়ের ব্যস্ততাকে রীতিমতো ডিনাই করবো এবং তিরস্কার করবো।

§  এপর্যায়ের ব্যস্ততাকে আমরা ব্যস্ততা না বলে দূর্বলতা বলবো।

§ মানসিক টেনশনের কারণে ব্যস্ততা।

§  মানসিক টেনশন হারাম। আল্লাহ নিষেধ করেছেন।

§  টেনশন করলে ফায়দা কি হয়? টেনশনের মাধ্যমে কোন সমস্যার সমাধান হয়না। বিধায় টেনশন না করে সমস্যা সমাধানে বাস্তব সম্মত চিন্তুা করুন। মনে রাখবেনঃ মানুষ যতদিন পৃথিবীতে থাকবে, ততদিন তার সমস্যা থাকবেই।

§  আক্বীদাকে সহীহ করতে হবে (তাকদীর ও রিযক সংক্রান্ত আক্বীদা পরিস্কার করুন)।

§ অলসতার কারণে ব্যস্ততা।

§  আলস্য দারিদ্রের লক্ষণ। অলসতা পরিহান করুন। সকল সময়কে ইবাদতে মধ্যে শামীল করুন। কাজ করুন, সব সময় কাজে মধ্যে থাকুন।

o     الكاسب حبيب الله.

o     ربِّ أعوذ بك من الكسل، ** اللهم! إني أعوذ بك من الكسل

o     أن رسول الله صلى الله عليه وسلم كان يدعو: (أعوذ بك من البخل والكسل، وأرذل العمر، وعذاب القبر، وفتنة الدجال، وفتنة المحيا والممات).

§ মানসিক ব্যস্ততা-খামাখা ব্যস্ততা-বিজি ফর নাথিং।

o    মানসিক ব্যস্ততা পরিহার। আপনি অনেক ব্যস্ত। কিন্তু কি নিয়ে ব্যস্ত-তা আপনি নিজেও জানেন না। আপনি ফ্রি হোন। ১০মিনিটের কাজ ১০ মিনিটেই করুন। ২৪ ঘন্টা সময় আপনার কাছে আছে। আপনি ঘড়ি ধরে ১ মিনিট সময় অতিবাহিত করুন। তারপর চিন্তুা করুনঃ আপনার কাছে ১৪৪০ মিনিট সময় আছে প্রতিদিন। অতএব আপনার যতই ব্যস্ততা থাকুক, তার জন্য আপনার কাছে ১৪৪০ মিনিট সময় আছে। আপনার সময়কে মিনিট ভিত্তিক ভাগ করে ব্যয় করুন।

§ টিভি দেখার ব্যস্ততা-একই খবর একাধিক চ্যানেলে বারবার দেখা।

§  আপনি খুব বড় রাজনীতিবীদ হওয়ার দরকার নাই। আপনি নিউজ বা টকশো দেখে মিছিল বাহির করতে হবে-এমন অবস্থায় আপনি নেই।

§  একই খবর বারবার দেখার ফজিলত বোধগম্য নয়। খবর জানা দরকার। এজন্য পত্রিকা পড়ুন।

§  যারা মিথ্যার বেসাতি বিলায়, তাদের তথ্য জানার জন্য আমি পেরেশান।

§  টকশো দেখে সময় নষ্ট করার মতো সময় না থাকাই ভাল।

§  টকশো একটি সংক্রামক ব্যাধি। যার মাধ্যমে জনশক্তির মাঝে প্রশ্ন ছড়ায়।

§  টকশো না দেখলে আপনি জবাবদিহি করতে হবেনা। কিন্তু তখন আপনার অনেক কাজ বাকী পড়ে আছে,যার ব্যাপারে আপনাকে জবাবদিহি করতে হবে।

খেলার মাঠে কেমনে যাবো, পড়া অনেক বাকী। অনেক আমায় শিখতে হবে, কেমনে ভূলে থাকি।

§ ফেইসবুক,ইন্টারনেট নিয়ে ব্যস্ততাঃ

§  আপনি সীমাহীন লাইক দেন, সীমাহীন শেয়ার করেন। কিন্তু আপনার পক্ষ থেকে কোন পোষ্ট নাই। মানে আপনি অন্যের প্রচারে ব্যস্ত।

§  ফেইসবুক অবসরে সামান্য বিনোদন।

§  ফেইসবুক তথ্য আদান প্রদান।

§  ফেইসবুক সামাজিক যোগাযোগ।

§  কিন্তু ফেইসবুক ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়া নয়। ফেইসবুক কতক্ষণ চালাবেন, তা নির্ধারণ করুন এবং মেনে চলুন। ইউটিউব না দেখাই ভাল। দেখতে হলে বিষয় ভিত্তিক দেখুন।

বিবিধ পরামর্শঃ

§  ব্লুথুথ ডিভাইস ব্যবহার করে গাড়ীতে বসে কথা বলা।

§  সময় রুটিন মাফিক ব্যবহার।

§  ছোট বড় সকল কাজকে তালিকায় নিয়ে আসা।

§  কাজের গুরুত্ব নির্ধারণ করে সে অনুযায়ী কাজ করা।

§  মনে রাখতে হবেঃ

لاَ يُكَلِّفُ اللّهُ نَفْساً إِلاَّ وُسْعَهَا لَهَا مَا كَسَبَتْ وَعَلَيْهَا مَا اكْتَسَبَتْ رَبَّنَا لاَ تُؤَاخِذْنَا إِن نَّسِينَا أَوْ أَخْطَأْنَا رَبَّنَا وَلاَ تَحْمِلْ عَلَيْنَا إِصْراً كَمَا حَمَلْتَهُ عَلَى الَّذِينَ مِن قَبْلِنَا رَبَّنَا وَلاَ تُحَمِّلْنَا مَا لاَ طَاقَةَ لَنَا بِهِ وَاعْفُ عَنَّا وَاغْفِرْ لَنَا وَارْحَمْنَا أَنتَ مَوْلاَنَا فَانصُرْنَا عَلَى الْقَوْمِ الْكَافِرِينَ

 আল্লাহ কারোর উপর তার সামর্থের অতিরিক্ত দায়িত্বের বোঝা চাপান না। প্রত্যেক ব্যক্তি যে নেকী উপার্জন করেছে তার ফল তার নিজের জন্য এবং যে গোনাহ সে অর্জন করেছে, তার প্রতিফলও তারই বর্তাবে। (হে ঈমানদারগন, তোমরা এভাবে দোয়া চাওঃ) হে আমাদের রব! ভূল-ভ্রান্তিতে আমরা যে সব গোনাহ করে বসি, তুমি সেগুলো পাকড়াও করো না। হে রব! আমাদের উপর এমন বোঝা চাপিয়ে দিয়ো না, যা তুমি আমাদের পূর্ববর্তীদের উপর চাপিয়ে দিয়েছিলে। হে আমাদের বর! যে বোঝা বহন করার সামর্থ আমাদের নেই, তা আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কোমল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমি আমাদের অভিভাবক। কাফেরদের মোকাবিলায় তুমি আমাদের সাহায্য করো।”  (বাকারাঃ ২৮২)

আমাদের সীমাহীন সাংগঠনিক ব্যস্ততা ও সাংগঠনিক কাজের সমন্বয়-আলোচনাটির  পিডিএফ ডাউনলোড করতে নিম্নোক্ত ডাউনলোড বটনে ক্লিক করুন।

লেখাটি আপনার ভাল লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন
আমার আলেচনা নোট লেখালেখি